ব্রিটেনে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে সংরক্ষিত বহু প্রাচীন একটি নথি পরীক্ষা করে গবেষকরা বলছেন এটি হয়ত পবিত্র কোরানের সবচেয়ে পুরনো পান্ডুলিপির অংশ।
এই নথির বয়স নির্ধারণ করতে তারা রেডিও কার্বন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন এবং বলছেন এই নথি অন্তত ১৩৭০ বছরের পুরনো।
এই আবিষ্কারে গবেষকরা একইসাথে বিস্মিত ও উচ্ছ্বসিত।
তারা বলছেন যিনি এই পান্ডুলিপি রচনা করেছিলেন তিনি সম্ভবত নবী মোহাম্মদের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন অথবা মুখোমুখি তাঁর বাণী শুনেছিলেন।
কোরানের এই পৃষ্ঠাগুলো বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে প্রায় অবহেলিত পড়েছিল প্রায় একশ বছর।
১৯২০এর দশকে আলফন্সে মিংগানা নামে একজন ইরাকি বংশোদ্ভুত ঐতিহাসিক মধ্যপ্রাচ্যের বহু প্রাচীন হাজার হাজার পুঁথিপুস্তক ও নথি সংগ্রহ করেছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারের জন্য। তার মধ্যে এই পৃষ্ঠাগুলো যে পবিত্র কোরানের অংশ তা তিনি বুঝতে পারেন নি।
ব্রিটিশ লাইব্রেরির এধরনের নর্থি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডঃ মুহাম্মদ ইসা ওয়েলি বলেছেন এই আবিষ্কার ”দারুণ উত্তেজনাময়” এবং মুসলমানদের জন্য ”ভীষণ খুশির” খবর।
শত বছর ধরে পড়ে থাকা এই নথিটি নজরে আসে একজন পিএইচডি গবেষকের এবং তিনি এর বয়স নির্ধারণ করার জন্য রেডিও কার্বন ডেটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিও কার্বন অ্যাক্সিলেরেটর ইউনিটে এই পরীক্ষা চালানো হয় এবং দেখা যায় ভেড়া বা ছাগলের চামড়ার ওপর লেখা এই পান্ডুলিপি এ যাবৎ বিশ্বে কোরানের সবচেয়ে পুরনো পান্ডুলিপি যা এখনও টিঁকে আছে।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার পরিচালক সুজান ওয়ারাল বলেছেন ”গবেষকরা স্বপ্নেও ভাবেন নি তারা কী আবিষ্কার করতে যাচ্ছেন।”
কার্বন ডেটিং পরীক্ষা বলছে যে চামড়ার ওপর এই পান্ডুলিপি লেখা হয়েছে তা ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে লেখা হয়েছিল এবং এই ফলাফলের নিশ্চয়তা শতকরা ৯৫ ভাগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্ম বিষয়ক অধ্যাপক ডেভিড টমাস বলেছেন এর অর্থ হল এই পান্ডুলিপি রচিত হয়েছিল ইসলাম ধর্ম প্রবর্তনের কয়েক বছরের মধ্যেই।
তিনি আরো বলেছেন এই পান্ডুলিপির রচয়িতা হয় নবী মোহাম্মদের সাক্ষাৎ সংস্পর্শে এসেছিলেন নয়ত সরাসরি তাঁর মুখ থেকে বাণী শুনেছিলেন এমন সম্ভাবনা খুবই প্রবল।